32 years, Bangladesh

Mountaineering

Beginner

Saurav Mondal

32 years,

5 years ago

এভারেস্ট পর্বত হতে মৃতদেহ অপসারণ করা হয় কিভাবে ?

গ্রহের সর্বোচ্চ বিন্দু এভারেস্ট হলো পৃথিবীর একমাত্র স্থান, যেখানে মানুষ কোনো রকম অনুভূতি ছাড়াই মৃতদেহ ফেলে রেখে আসে।

https://mountainplanet.com/uploads/images/Dead_bodies_Everest.jpg

  

সাধারণত, এভারেস্ট পর্বতের খাঁদে যেকোনো একটা দুঃখজনক ঘটনা ঘটার পর মানুষজনের মনে একটি সমীচীন প্রশ্ন জাগে, আর সেটি হলো – আসলেই কি পর্বতারোহীর মৃতদেহ এভারেস্টের খাঁদ হতে উদ্ধার করা হবে? সংবাদমাধ্যম গুলির দ্বারা বাগ্বিতন্ডা আরও বৃদ্ধি পায়, যখন সাংবাদিকেরা এসকল দুর্ঘটনার জন্য এভারেস্টকে “বিশ্বের সর্বোচ্চ কবরস্থান” এর পাশপাশি “মৃত্যুর মেঘদূত” হিসেবেও আখ্যায়িত করে থাকেন।

কতজন সেখানে ?

১৯২২ সাল হতে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এভারেস্ট পর্বতের খাঁদে প্রায় ৩০০ জন মৃত্যুবরন করেছেন। সম্ভবত, সর্বপ্রথম মৃত্যুটি ১৯২৪ সালে নিরুদ্দেশ হওয়া দুই ইংরেজ পর্বতারোহী জর্জ ম্যালোরি (George Mallory) ও এন্ড্রু আরউইন (Andrew Irwine) - এদের সঙ্গে সম্পর্কিত। দুর্ঘটনাবশতঃ ১৯৯৯ সালে জর্জ ম্যালোরির দেহটি পাওয়া গেলেও আরউইনের দেহটির কোন খোঁজ এখনো পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

চোমোলাংমা (Chomolungma) বা পর্বতমাতা তার সন্তানদের নিজের নিকট নিয়ে নিয়েছেন, যাদের একতৃতীয়াংশই হলেন শেরপা জনগোষ্ঠী – উল্লেখ্য, ১৯২২ সাল থেকে শেরপাদের মৃত্যু গণনা শুরু করা হয়। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইরাকযুদ্ধের ১ম চার বছরে একজন পদাতিক সৈন্যের যে পরিমাণ মৃত্যু ঝুকি ছিল, তার থেকেও সাড়ে ৩ গুণ বেশি মৃত্যু ঝুকি থাকে এই শেরপাদের।

https://mountainplanet.com/uploads/images/Mallory.jpgএন্ড্রু আরউইন ও জর্জ ম্যালোরি (ডান পাশে)

হিমবাহ ও অতি উচ্চতায় সংঘটিত প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার কারণেই সাধারণত এভারেস্টে মানুষ মৃত্যুবরণ করে। ২০১৭ সাল পর্যন্ত ২৯২ জন এভারেস্টের খাঁদে মারা যান। দুর্ভাগ্যবশতঃ সংখ্যাটি আরও বৃদ্ধি পাবে। প্রাণনাশকমূলক সাল হিসেবে ২০১৭ কে মনে না করলেও, এবছরে চোমোলাংমার শিকারের সংখ্যা ৬, যাদের মধ্যে সুইজারল্যান্ডের দুবারের পিয়োলেট ডি’অর পুরষ্কার (Piolet d'Or award) জয়ী পেশাদার ও অভিজ্ঞ পর্বতারোহী উইলি স্টেক (Ueli Steck) একজন।

কারণ

পর্বতারোহীরা ৮০০০ মিটারের উপরের এলাকাকে বলেন “রেড জোন” বা “মৃত্যু অঞ্চল(Death Zone)”। এখানে কেউ একবার পৌছে গেলে তাকে অবশ্যই একটা বিষয়ে সতর্ক থাকতে হয় যে, অসুস্থ বা কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সেখানে কোনো ধরণের উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব নয়। ‘রেড জোন” শব্দটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করেছিলেন, ১৯৫২ সালের সুইস অভিযানের প্রধান - এডওয়ার্ড উইচ ডুনান্ট (Edouard Wyss-Dunant)।

৮০০০ মিটারের উপরের উচ্চতায় বায়ুমণ্ডলীয় চাপ ৩৫.৬ কিলো প্যাসকেল (পারদ উচ্চতায় ২৬৭ মিলিমিটার) এরও কম থাকে। এখানে বাতাসে যে পরিমাণ অক্সিজেন থাকে, তাঁতে বেঁচে থাকাটা সম্ভব নয়। উল্লেখ্য, ৫০-১০০ মিটার উচ্চতার মধ্য ইউরোপীয় সমভূমিতে বায়ুমণ্ডলীয় চাপ হলো ১০১ কিলো প্যাসকেল বা পারদ উচ্চতায় ৭৬০ মিলিমিটার।

পৃথিবীর সর্বোচ্চ উচ্চতায় পর্বতারোহীদের অবস্থা বোঝার জন্য, হয় নিজেকে উড়োজাহাজের পাখার উপর কল্পনা করুন অথবা সাধারণের তুলনায় ৩ গুণ কম শ্বাস প্রশ্বাস গ্রহণ করুন। এটা আপনাকে একটু হলেও অনুধাবণ করতে সাহায্য করবে যে, পর্বতারোহীরা পৃথিবীর সর্বোচ্চ চূড়ায় কেমন অনুভব করে থাকেন। এমতাবস্থায় তাদেরকে -২০° সে থেকে -৪০° সে তাপমাত্রায় জটিল সব ভূখণ্ড, যেমন- উল্লম্ব পাথুরে এলাকা পার হয়ে যেতে হয়।

সার্জেই কোফানোভ (Sergey Kofanov), দুবারের এভারেস্ট বিজয়ী, গাইড, এভারেস্ট উদ্ধার অভিযানে অংশগ্রহণকারী   

https://mountainplanet.com/uploads/images/Kofanov4.jpg

কুম্ভকর্ণ বা জান্নু চূড়ায় (Jannu Peak) সার্জেই কোফানোভ

৮০০০ মিটারের উপরের উচ্চতায় একজন মানুষ খুব কমই নিজেকে নিজে বহন করতে পারেন। অত্র এলাকায়, একজন প্রশিক্ষিত অ্যাথলেট বা গাইড ১০ কিলোগ্রাম ওজনের ব্যাকপ্যাকে অক্সিজেনের সিলিন্ডারসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখেন। এসকল উপকরণসহ যেকেউই মিনিটে গড়ে বড়জোড় এক/দুই পা আগাতে পারবেন। যদি আমরা একটি স্বতস্ফুর্ত উদ্ধার অভিযানের কথা না বলি, তাহলে এটা অসম্ভব বলে মনে হবে যে, এমন পরিস্থিতিতে একজন মানুষ কিভাবে অন্য একজন মানুষকে তুলে নিয়ে বা টেনে নিয়ে যেতে পারেন। বিশেষতঃ সকল উপকরণসহ একজন পর্বতারোহীর ওজন ৭০ থকে ১০০ কিলোগ্রাম হয়ে থাকে।

এভারেস্টে বাতাসের তীব্রতা হলো ৭৮ মিটার/সেকেন্ড অর্থাৎ ঘন্টায় ১৭৫ মাইল, যেখানে একটি ৫ম গ্রেডের হারিকেনের বাতাসের তীব্রতা ৭০ মিটার/সেকেন্ড অর্থাৎ ঘন্টায় ১৫৬ মাইল। এটার ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা বর্ননাতীত। ২০০৬ সালে ম্যাথিউস, একটি ৫ম গ্রেডের হারিকেন, ফ্লোরিডাতে ৩৫০০ দালান কোটা ধ্বংস এবং ৯০০ জন মানুষের প্রাণহরণ করেছিল।

আধুনিক আবহাওয়া পূর্বাভাসের প্রযুক্তি ধন্যবাদ পাবার যোগ্য। বর্তমানে আয়োজকেরা অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা এমনভাবে করেন যেন, অভিযাত্রীদের অভিযানের সময় কোনো ধরণের হারিকেনের সম্মুখীন হতে না হয়। বিশেষতঃ বাণিজ্যিক অভিযানসমূহ এই পূর্বাভাসের প্রযুক্তিতে বিশেষভাবে মনোযোগ দিয়ে থাকে।

কিন্তু এটা শুধুমাত্র বাতাসের তীব্রতা বা ঠান্ডার ব্যাপার নয়, পাশপাশি সেখানে রয়েছে ভূমিকম্প, চরমাবস্থায় শারীরবৃত্তিয় কার্যক্রমের ব্যর্থতা, অক্সিজেন সরঞ্জামের কার্যহীণতা, দড়ি ছিড়ে যাওয়া, উপকরণ নির্বাচনে ভুল করা সহ আরও অনেক কিছু। ফলস্বরুপ, যারা মনুষ্যসীমা অতিক্রম করে পৃথিবীর সর্বোচ্চ চূড়ায় আরোহণ করতে যান, তাদের মধ্যে অনেকেই প্রাণ হারান, এমনকি পেশাদার পর্বতারোহী বা শেরপারাও বাদ পড়েন না।

নো ম্যানস ল্যান্ড – যেখানে কেউ নেই    

এ ধরণের অমানবিক পরিস্থিতিতে সাধারণত মানবাধিকার গুলি প্রয়োগ হয়ে থাকে না। এতটা উচ্চতায় যারা কখনও যাননি, মাঝেমাঝে তারা “ডেথ জোন” এর নিয়মকানুন গুলি বুঝতে ব্যর্থ হন। আর তাই ৮০০০ মিটার উচ্চতায় মৃত্যু পথযাত্রীকে ফেলে আসার জন্য অন্যান্য পর্বতারোহীদের দোষারোপ করেন।

পর্বতারোহী সম্প্রদায়ে  (Mountain Community) এরকমই একটি জলজ্যান্ত উদাহরণ হলো, ২০০৬ সালে একাকী ব্রিটিশ পর্বতারোহী ডেভিড সার্পের (David Sharp) মৃত্যু। প্রায় ৪০জন পর্বতারোহী তাকে পাশ কাটিয়ে চলে গিয়েছিলেন। সাড়ে ৮ হাজার মিটার উচ্চতায় ক্লান্ত হয়ে কোন রকম নড়াচড়া না করতে পারার জন্য, তিনি চুপচাপ বসেছিলেন সুপরিচিত “গ্রিন বুট” নামক মৃতদেহের পাশে, যেটি হলো সেওয়াং পালজোর (Tsewang Paljor) নামক ভারতীয় পর্বতারোহীর, যিনি ১৯৯৬ সালে মারা গিয়েছিলেন।

কিছুকিছু পর্বতারোহী অন্ধকারে ডেভিড সার্পকে চিনতে পেরেছিলেন না, আর অন্যরা তাকে সেওয়াং মনে করেছিলেন, কারণ তিনিও সবুজ বুট পরিহিত ছিলেন এবং কোনো ধরণের নড়াচড়াও করছিলেন না। সে যাই হোক, চোমোলাংমার ১৯৯তম শীকার- ডেভিড সার্প হাইপোথারমিয়ার কারণে মারা গিয়েছিলেন। একবছর পর, ডেভিড সার্প এর পরিবারের অনুরোধে, তার মৃতদেহটি চলাচলের পথ থেকে সরিয়ে পাশে আবডালে রাখা হয়।

https://mountainplanet.com/uploads/images/1200px-Green_Boots.jpgসাড়ে ৮ হাজার মিটার উচ্চতায় সেওয়াং পালজোরের মৃতদেহ

সার্জেই কোফানোভ : এভারেস্ট উদ্ধার কার্যক্রমে নানা ধরণের সমস্যা বিদ্যমান। ডেভিড সার্প কোনো ধরণের গাইড বা শেরপাদের সাহায্য ছাড়াই একাকী এভারেস্টের চূড়ায় উঠতে চেয়েছিলেন। ফলস্বরূপ, তিনি নিজেকে এমন একটি পরিস্থিতির মধ্যে অবতির্ণ করেছিলেন যে, যেকোন জরুরী পরিস্থিতিতে তাকে পর্বতে কোনো সাহায্য ছাড়াই  একাকী অবস্থান করতে হবে। এবং দূর্ভাগ্যবশতঃ হয়েছিলোও তাই।

ডেভিড সার্পকে অনাগ্রহ করে ফেলে যাওয়া বাণিজ্যিক পর্বতারোহীদের দোষারোপ করাটা সমীচীন নয়।

চরম প্রতিকূল পরিস্থিতিতে প্রথমবারের মতো এই পথ দিয়ে আরোহনকারী সকল মানুষের কাছে যেকোনো মৃতদেহকে মনে হবে নতুন এবং অপরিচিত। তারা এ ধরণের পরিস্থিতি সম্পর্কে সত্যই সচেতন বা অবগত, কোনটিই নয়।

যদিও একজন পর্বতারোহীর বসেবসে বিশ্রাম নেওয়াটা কি সাধারণ কোনো বিষয় ? অন্যদিকে, সকল পর্বতারোহী এভারেস্টে শত শত মৃতদেহের কথা শুনেছেন, এটা যদি সেগুলোর মধ্যে একটি হয় ?

তদুপরি, ডেভিড সার্প সর্বদা অচেতন অবস্থায় ছিলেন এবং যখনই কোনো পর্বতারোহী তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছেন অথবা তার চোখে ফ্ল্যাশলাইট ধরেছেন, তিনি কোনো রকমের সাড়া প্রদান করেননি। দূর্ভাগ্যবশতঃ তার ভাগ্য পূর্ব থেকেই নির্ধারিত ছিল।

একটি উন্মুক্ত কবরস্থান

এভারেস্ট যেমন বারবার সাক্ষী হয়েছে মনুষ্য আত্মার সর্বোচ্চ উল্লাসের, তেমনি গভীরতম মানব পতনেরও সাক্ষী এই এভারেস্ট। গত বেশকিছু বছর ধরে, এভারেস্টের পথে মৃতদেহ গুলির অবস্থা ধীরেধীরে পরিবর্তিত হচ্ছে। এভারেস্টে ঘুমন্ত সুন্দরী নামে পরিচিত, “ফ্রান্সিস আর্সেন্টিয়েভ ডিস্টেফানো (Francis Arsentiev-Distefano)” এর মৃতদেহটি এতোমধ্যে সরানো হয়েছে। আমেরিকার এই নারী পর্বতারোহী ১৯৯৮ সালে সর্বপ্রথম একজন নারী পর্বতারোহী হিসেবে কোনো রকমের অক্সিজেন সরঞ্জাম ছাড়াই এভারেস্টের চূড়া বিজয় করেছিলেন, কিন্তু শেষমেশ ৮২০০ মিটার উচ্চতা হতে নিচে নেমে আসতে ব্যর্থ হন।

https://mountainplanet.com/uploads/images/francys-arsentiev-mount-everest-alive%281%29.jpg “ফ্রান্সিস আর্সেন্টিয়েভ ডিস্টেফানো”

এভারেস্টের ঝড়ের মতো বাতাস “গ্রিন বুট” নামক মৃতদেহটিকে উড়িয়ে নিয়েগিয়েছিল, যা পরবর্তিতে ২০১৭ সালে এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার পথ হতে বেশ খানিকটা দূরে পূনরায় দেখা যায়। একই ঘটনা ঘটেছিল, জার্মান নারী হ্যানোলোরে স্কমাজের (Hannelore Schmatz) মৃতদেহের ক্ষেত্রে, যিনি ১৯৭৯ সালে এভারেস্টের চূড়া হতে অবতরণের সময় মারা যান। ১৯৮৪ সালে তার মৃতদেহটি অপসারণের সময় ২ জন নেপালী নিহত হন। বহু বছর ধরে, বসে থাকাবস্থায় বরফে জমে যাওয়া জার্মান এই মহিলার চুল বাতাসে উড়তে দেখাগিয়েছে। কিন্তু এখন আর হ্যানোলোরেকে দেখা যায় না।

বর্তমান পরিস্থিতি

এ সকল আতঙ্কজনক পরিসংখ্যান সত্ত্বেও, এভারেস্টের চূড়া বিজয়কারীর সংখ্যা কিন্তু কমছে না। এভারেস্টের চূড়ায় যাবার পথে পর্বতারোহীরা যে মৃতদেহ গুলি অতিক্রম করে, সেগুলি তাদের বংশধরদের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করে যখন পর্বতারোহী সম্প্রদায়ের (Mountain Community) পাশাপাশি সংবাদমাধ্যম গুলিতে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন লেখা প্রকাশিত হতে থাকে।

https://mountainplanet.com/uploads/images/mari-partyka-503726-unsplash.jpgছবি – মারি পার্ত্যিকা (Mari Partyka)

আমরা এতোমধ্যে আপনাদের অবগত করেছি যে, কিছুকিছু মৃতদেহ হয় প্রকৃতির বিরূপ শক্তির মাধ্যমে অথবা মনুষ্য প্রচেষ্টায় অপসারিত হয়েছে। অবশ্য প্রতিবছরই পর্বতারোহী এবং শেরপাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবার কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। উল্লেখ্য, শুধুমাত্র ২০১৭ সালেই ৬৪৮জন পর্বতারোহী এভারেস্টের চূড়া বিজয়ের গৌরব অর্জন করেছেন।

সার্জেই কোফানোভ : “এভারেস্ট হলো একটি মৃতদেহের স্তূপ এবং পর্বতারোহীরা সেগুলো মাড়িয়েই যাওয়া আসা করেন” – এই বিষয়টা নিয়ে বহু তর্ক-বিতর্ক হলেও এখনও কোনো ধরণের নৈতিক সমাধানে পৌছানো সম্ভব হয়নি। মানুষদের যদি মৃতদেহ গুলি অপসারণের জন্য বলা হয়ে থাকে, তাহলে কেউ কেউ এর প্রতিউত্তরে বলেন, তাদেরকে ওখানেই শায়িত থাকা উচিত।

সংখ্যার দিক থেকে যদি বিবেচনা করা হয়, তাহলে এভারেস্টের বিভিন্ন খাঁদে প্রায় ৩০০ মতো মৃতদেহ রয়েছে, কিন্তু বর্তমানে একজন পর্বতারোহী এভারেস্টের চূড়া আরোহণকালে মাত্র ২/৩টি মৃতদেহ দেখতে পান। সাধারণত এই তথ্যটি কতটুকু সত্য তা বিবেচ্য নয়। মৃতদেহ গুলি নিঃসঙ্গ, আর আপনার সেগুলিকে দেখতে যাওয়া উচিত।

সাধারণত এভারেস্টের চূড়া হতে অবনমণের সময়ে পর্বতারোহীরা মৃত্যুর সম্মুখীন হয়ে থাকেন। যেহেতু তারা রাতের আধারে চূড়ায় উঠে থাকেন, ফলে তারা মৃতদেহ গুলি না সরিয়ে বরং সেগুলো মাড়িয়েই যে উপরে ওঠেন – সেটা নৈতিকতার দৃষ্টিকোণ হতে দেখা হয় না।

যদি কোনো পর্বতারোহী ঋণাত্মক ৩৫° সে তাপমাত্রায় ৮০০০ মিটার উচ্চতায় মৃত্যুবরণ করেন, তাহলে ক্ষণিকের মধ্যেই তার সম্পূর্ণ দেহ বরফে পরিণত হয়। অধিকন্তু, এতো উচ্চতায় কিছুদিন পরেই দেহটি পাথুরে খাদের বরফের সঙ্গে জমাট বেধে যায়। এমতাবস্থায়, পাথুরেপৃষ্ঠ হতে মৃতদেহ গুলিকে পৃথক করাটা সম্পূর্ণরূপে অসম্ভব। আর এ কারণেই মৃতদেহ গুলিকে ভূপৃষ্ঠে অবনমণের ক্ষেত্রে নানাবিধ সমস্যা মনুষ্য বিবেককে দ্বিধাগ্রস্থ করে থাকে।

যদি আমরা সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ও নির্দয়ভাবে মৃতদেহ সমূহ এভারেস্ট হতে অপসারণের জন্য কোনো সূত্র প্রয়োগ করি, তাহলে দেখাযাবে যে, পাথুরে খাঁদ হতে বরফে জমে যাওয়া দেহগুলি পৃথক করবার সময় বিভিন্ন খন্ডে টুকরো টুকরো হয়ে যাবে, যেটি মানুষের প্রচলিত সম্মানসূচক অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া এবং শেষকৃত্য অনুষ্ঠান বিধির বহির্ভূত।

মানুষের ক্ষমতা অসীম, আর এই অসীম ক্ষমতার সবটুকুই নির্ভর করে ইচ্ছাশক্তির ওপর। এভারেস্টের বিভিন্ন খাঁদ হতে মৃতদেহ অপসারণের কথা বলতে গেলে, প্রথম ও সর্বপরি যেটার উপর এটা নির্ভরশীল তা হলো অর্থায়ন, কারণ এটা অবশ্যই একটা অত্যন্ত ব্যয়বহুল কার্যক্রম। এই কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সর্বপ্রথম যা প্রয়োজন তা হলো মানবসম্পদ। যে উচ্চতায় মৃতদেহ গুলি রয়েছে, সেখানে হেলিকপ্টারের প্রয়োগ খুবই সীমিত পর্যায়ে করা সম্ভব। তাই যা করবার সেটার অধিকাংশই মানুষেরই করতে হবে। তবে এটা কখনোই কোনো ধরণের স্বেচ্ছাসেবকের কার্যক্রমের অন্তর্ভূক্ত হবে না। ফলে যেসকল শেরপারা এ কাজে অংশগ্রহণ করবেন, তাদেরকে নিঃসন্দেহে ভাল অংকের অর্থ প্রদান করতে হবে।

এই সমস্যার আশু সমাধান প্রয়োজন। প্রায় ৩০০ জনের মতো যেসকল পর্বতারোহী এভারেস্ট পর্বতে নিহত হয়েছেন, সেগুলির সবই কিন্তু এভারেস্টের চূড়ায় যাবার যাত্রা পথে নয়। তারা যেখানে মারা গিয়েছিলেন, তাদের মৃতদেহ গুলি সেখানেই রয়েছে, যদি না প্রকৃতি বা মানুষ সেগুলোকে অপসারণ করে থাকে।

ঈস্রাফিল আসুরলি (Israfil Ashurly) – পর্বতারোহী, আইস ক্লাইম্বিং এর আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিচারক, UIAA এর ইয়ুথ কমিশনের প্রেসিডেন্ট (২০১০ – ২০১৭), আজারবাইজান মাউন্টেনেয়ারিং ফেডারেশনের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট, ২০০৭ সালের মধ্যে সেভেন সামিট জয়ী

https://mountainplanet.com/uploads/images/AshyrlyEverest.jpgএভারেস্টের চূড়ায় ঈস্রাফিল আসুরলি

এমন যদি

সম্প্রতি বছরগুলোতে অভিযানসমূহের দলনেতা হিসেবে যে শেরপারা থাকেন, তারা ট্রেইল হতে বেশকিছু মৃতদেহ অপসারণ করেছেন, যা ছিল অত্যন্ত দূরহ একটি প্রক্রিয়া।

বর্তমানে বেশকিছু মৃতদেহ তিব্বত প্রান্তের এভারেস্টের উত্তর দিকের পথে রয়েছে, যা “মৃত্যুর দুয়ার (Death Couloir)” নামে পরিচিত, যেটি ৮০০০ মিটারের উপরে ২য় ধাপে অবস্থিত, ঠিক যেখানেই জর্জ ম্যালোরির দেহাবশেষ পাওয়া যায়। যদি কেউ এই শৈলশ্রেণী বেয়ে উঠবার বা নামবার সময় মারা যান, তাহলে তার মৃতদেহ হয় ঐ মৃত্যুর দুয়ারে অথবা দক্ষিণ দিকের খাড়া দেওয়ালে পতিত হবে, যেখানে যাবার কোনো ধরণের পথ নেই এবং মানুষও সেখানে কখনও যায় না।

https://mountainplanet.com/uploads/images/Everest1.jpgহিলারি স্টেপের ওপরে পর্বতারোহীরা     

তবে নেপালের প্রান্ত হতে এভারেস্টে চড়ার ক্ষেত্রে, পর্বতারোহীরা নিহত হন অন্য জায়গা গুলিতে । ২০১৫ সাল পর্যন্ত “হিলারি স্টেপ (Hillary Step)” ছিল বিশেষত ভয়ের জায়গা। ঐ বছরের ভূমিকম্পে এই ১৩ মিটার উচ্চতার বরফ ও তুষারাবৃত শৈলশ্রেণী ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। ২০১৭ সালের মে মাসে ব্রিটিশ পর্বতারোহী টিম মোসাডেল (Tim Mosedale) নিশ্চিত করেছেন যে, এভারেস্টে এখন কোনো হিলারি স্টেপ নেই। তার মতে, বর্তমানে ওঠা এবং নামা উভয়ই আরও বেশি বিপদজনক হবে। পূর্বে ঐ পথ খুবই মজবুতভাবে দড়ি দিয়ে বাঁধা ছিল, কিন্তু এখন তা সম্পূর্ণভাবে অস্থিতিশীল।

মৃতদেহ অবতরণের কথায় আবার ফেরত আসা যাক। এভারেস্ট হতে মৃতদেহ সমূহ অবতরণ করা শুধুই দুরূহ নয় বরং ব্যাপক কষ্টসাধ্যও বটে। আগেই বলা হয়েছে যে, জমে বরফ হয়ে যাওয়া মৃতদেহের ওজন গিয়ে দাঁড়ায় প্রায় ১০০ কিলোগ্রামের মতো। জমাট হয়ে যাওয়া এই মৃতদেহ যদি পাথুরে খাঁদ হতে পৃথক করা যায়ও, তাহলে নূন্যতম ১০/১৫ জন শেরপা মিলে শুধুমাত্র এগুলোকে টানতে টানতে উপর হতে নিচে নামালেই হবে না বরং তাদেরকে এগুলো নিয়ে বহু খাড়া খাড়া ঢাল বেয়েও নিচে নামাতে হবে। আর এই সম্পূর্ণ ব্যবস্থাপনার জন্য শক্ত, মজবুত ও স্থায়ী নির্দিষ্ট রশি ও মই দ্বারা তৈরী একটি রুটের প্রয়োজন, যেখনে প্রচন্ড ঝুকির মধ্য দিয়ে কমপক্ষে ১ ডজন অভিজ্ঞ পর্বতারোহীকে কাজ করতে হবে। আর ভাগ্য যদি খারাপ থাকে, তাহলে তাদের অবস্থা ঐসকল নেপালীদের মতো হবে যারা হ্যানোলোরে স্কমাজের মৃতদেহ উদ্ধার করতে গিয়ে নিহত হয়েছিলেন।

একজন পর্বতারোহীর এভারেস্টে অভিযানে সাধারণত ব্যয় হয়ে থাকে ৪০ হাজার থকে ১ লক্ষ ডলার – এটি মাথায় রেখেই আপনি মৃতদেহ অপসারণের একটি অভিযানের খরচ হিসাব করতে পারবেন, এরসঙ্গে প্রতি হেলিকপ্টার ট্রিপের খরচ হিসেবে ৫ হাজার থেকে ২০ হাজার ডলার যোগ করতে ভুলবেন না। এটিও মাথায় রাখতে হবে যে, হেলিকপ্টারসমূহ ৫৩৬৪ মিটার উচ্চতায় বেসক্যাম্পের উপরে সাধারণত উড্ডয়ন করে না। উল্লেখ্য, চীন সরকার তিব্বত অঞ্চল হতে সকল ধরণের উড়োজাহাজ উড্ডয়ন নিষিদ্ধ করেছে।

হেলিকপ্টারের ১২হাজার মিটারের উপর দিয়ে উড্ডয়ন বা চোমোলাংমার চূড়ায় অবতরণসহ বেশকিছু অবিশ্বাস্য ঘটনা রয়েছে, যা শুধুমাত্র সাহসিকতার সঙ্গেই তুলনাযোগ্য। নিয়োমিতভাবে এগুলোর পুনরাবৃত্তি সম্ভব নয়।

ঈস্রাফিল আসুরলি : ২০০৭ সালে তিব্বতের দিক হতে এভারেস্টের উত্তরের পথ ধরে আমি যখন অভিযানের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলাম, তখন আমাকে অনেক ধরণের গুজবের সম্মুখীন হতে হয়েছিল। উল্লেখযোগ্য – মৃতদেহ সমূহের উপর দিয়ে অথবা সেগুলো সরিয়ে পথ তৈরী করে যেতে হবে অথবা যারা নিহত হয়েছেন, তাদেরকে অবশ্যই দেখতে হবে, এছাড়াও আর কতো কি। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৯৬ সালে নিহত ভারতীয় পর্বতারোহী সেওয়াং পালজোর, যিনি “সবুজ বুট” নামে অধিক পরিচিত। আর সম্প্রতি নিহত হয়েছেন তন্মধ্যে, ২০০৫ সালে নিহত হওয়া স্লোভেনিয়ান মার্কো লিহটেনেকার (Marko Lihteneker) । এছাড়াও জর্জ ম্যালোরির দেহ তো রয়েছে, যা ১৯৯৯ সালে খুজে পাওয়া যায়।

এটা প্রত্যাশিত ছিল যে, সত্যিকার অর্থে আমাকে পরিত্যাক্ত মৃতদেহ সমূহ দেখতেই হবে, যা আমার আসন্ন অভিযানে অবশ্যই প্রভাব ফেলবে। যেটা এখনও চিন্তা করলে, আমি সুস্থ বোধ করি না। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার সময়কালে, একরাতে প্রচন্ড তুষারপাত হয়, ফলপ্রসূ উঠবার এবং নামবার উভয়সময়েই আমাকে একটিও মৃতদেহ দেখতে হয়নি। যে দলটি পরের দিন গিয়েছিলো, ভাল আবহাওয়ার দরুণ বরফ গলে যাওয়ায় তারা বেশকিছু মৃতদেহ দেখেছিল। যেহেতু আমি এগুলো নিয়ে খুব বেশিই চিন্তিত ছিলাম, তাই সর্বশক্তিমান আমার যাত্রাকে এমনভাবেই তৈরি করে দিয়েছিলেন যে আমাকে কোনো মৃতদেহই দেখতে হয়নি।   

মৃতদেহ গুলি অপসারণ করা অথবা পাথর দিয়ে চাপা দেওয়াটা অবশ্যই একটি ভাল উদ্যোগ হবে, তাই নয় কি ? আমার মতে, মৃত মানুষদের অবশ্যই মাটির সাথে মিশে যাওয়া উচিত। মৃত মানুষদের সংগ্রহ করে রাখার চেয়ে, প্রথানুযায়ী তাদেরকে মাটিতে কবর দেওয়াটাই শ্রেয়। যদি সেগুলোকে অপসারণ করা সম্ভব না হয়, তাহলে তাদের জন্য বিশেষ কোনো শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা উচিত। আমি মনে করি, তাদেরকে এভাবে বাইরে ফেলে রাখাটা ভুল। যদি কেউ এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যায়, তাহলে তার মৃতদেহটি সেই দুঃখজনক ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়, যেটা কখনই উচিত নয়।  

বিকল্প কোনো ব্যবস্থা সেখানে রয়েছে কি ?

এভারেস্টে যে সকল মৃতদেহ স্থায়ীভাবে পরিত্যাক্ত অবস্থায় রয়েছে, সেগুলো বিশেষ বুনণহীন (non-woven) কাপড় দ্বারা ঢেকে দেবার জন্য ২০১৭ সালে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। তবে এখানে প্রশ্ন থেকেই যায় – এগুলো টিকবে কতোদিন ?

https://mountainplanet.com/uploads/images/7vershin2.jpgএভারেস্ট পর্বতে মার্কো লিহটেনেকারের ঢেকে রাখা মৃতদেহ

কারণ ৮০০০ মিটারের উপরের বাতাস এবং তুষারপাত এতোটাই শক্তিশালী যে, এগুলো যেকোনো কিছুর সাথে মিশে যেতে পারে। আবার পাথুরে খাদের সাথে জমাট হয়ে যাওয়া মৃতদেহ গুলি মুড়িয়ে রাখাটাও প্রায় অসম্ভব। তুষার বা বরফের সাথে কাপড় কিভাবে আটকে রাখা সম্ভব ?

আবার মৃতদেহ গুলি কি পাথর দ্বারা আদৌ চাপা দিয়ে রাখাটা সম্ভব ? এতোটা উচ্চতায় ছোট ছোট পাথরগুলি খুব সহজেই বাতাসে উড়ে যাবে। অন্যদিকে এরকম স্থানে একজন পর্বতারোহী মিনিটে এক পা দুই পা করে এগিয়ে যাওয়া গতিতে কতোগুলি পাথরই বা বহন করে নির্দিষ্ট গন্তব্যস্থলে নিয়ে যেতে পারবেন ?    

ঈস্রাফিল আসুরলি : UIAA তে কাজ করার সময় আমি বিভিন্ন মিটিং-এ এই সমস্যা উত্থাপন করে সমাধানের জন্য চেষ্টা করতাম। তাছাড়াও বিভিন্ন ধরণের যুক্তি সঠিকভাবে সেখানে উপস্থাপনের জন্য চিন্তা করে অনেক সময় ব্যয় করতাম। যখনই আমি এটা নিয়ে বেশ চিন্তামগ্ন থাকতাম, তখন এমন একটা উপসংহারে পৌছাতাম যা বেশকিছু মাধ্যমের উপর নির্ভরশীল, যেগুলো হয়ত পরবর্তিতে অনুদান হিসেবে গ্রহণ করা যেতো। অর্থের জন্য আবেদন করতে হবে এমন কোনো অংগ-সংগঠন বা তহবিল সম্পর্কে আমার কোনো ধারণাই ছিল না। কোথা হতে আর কেই বা এই সমস্যা সমাধানের জন্য UIAA এর হয়ে তহবিল সংগ্রহ করবেন ? দূর্ভাগ্যবশতঃ আমি UIAA তে থাকাবস্থায় এই বিষয়টি নিয়ে কোনো অগ্রগতিই হয়নি। সেসময়ে আমার ধারণাকে কোনো প্রকল্পে রূপদান করা সম্ভব হয়নি, যদিও ভবিষ্যৎ-এ আমি আবার UIAA তে ফিরে যাবো এবং এই বিষয়টি আবারও উপস্থাপন করবো। আশাকরি, শীঘ্রই কেউ একজন এই সমস্যাটি নিয়ে কিছু একটা করবেন।                  

উপসংহার :   

সর্বপরি, এভারেস্ট পর্বত হতে মৃতদেহ অবতরণ বা সমাধি করবার যে প্রশ্নটি রয়েছে, শ্রদ্ধার সঙ্গে বলতে হয় যে, নিকট ভবিষ্যৎ-এ এটির কোনো সমাধান হবে বলে মনে হয় না। এখন প্রশ্ন হলো, কেন?

অন্যভাবে যদি চিন্তা করা হয়, উদাহরণস্বরূপ- বহু শতাব্দী ধরে নৌযাত্রায় আনেক মানুষ গভীর সমুদ্রে মৃত্যুবরণ করেছেন, কিন্তু তাদের দেহাবশেষ উদ্ধারে কাউকে নিযুক্ত করা হয়নি, যেমন- টাইটানিক। মাঝেমাঝে আবার ডুবুরীরা সমুদ্র তলদেশে মৃতদেহ খুজে পেলেও সেগুলো উত্তোলন অথবা শেষকৃত্য, কোনোটাই করা হয় না।

এমতাবস্থায়, এভারেস্ট পর্বতের মৃতদেহ গুলির জন্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করা হলেও পর্বতারোহী সম্প্রদায় (Mountain Community) সহমত পোষণ করেন না। কারও চাওয়া সকল মৃতদেহ অপসারণ করা হোক, আবার কারও চাওয়া সকল মৃতদেহ যেমন আছে তেমনই থাকুক। তবে ২০১৭ সাল পর্যন্ত, প্রতিবছর ৬ জন করে যে মৃতের হার রয়েছে, সেটি যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে বেশ কয়েক বছর পর পৃথিবীর সর্বোচ্চ চূড়ায় শুধুমাত্র মৃতদেহ ছাড়া বিন্দুমাত্র কোনো স্থান ফাকা থাকবে না। তবে শীঘ্রই বা পরবর্তিতে  এ সমস্যার সমাধান অবশ্যই করতে হবে। UIAA বা অন্যান্য আন্তর্জাতিক পর্বতারোহী সংস্থা হতে অভিজ্ঞরা যদি এই সমস্যা সমাধানের জন্য উদ্যোগী হয়ে থাকেন, তাহলে ব্যাপারটি আরও সহজ হবে।

https://mountainplanet.com/uploads/images/CrashTent.JPGএভারেস্ট পর্বতের খাঁদে দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া তাবু

যেকোনো ক্ষেত্রে, আমাদেরকে সম্মানের সাথে সে সকল পর্বতারোহীদের স্মরণ করতে হবে, যারা জীবনের মায়া ত্যাগ করে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শীখর জয় করতে যান। আমাদেরকে পর্বত গুলিকে আরও সুরক্ষিত করার চেষ্টা করতে হবে তাদের জন্য, যারা সবেমাত্র চূড়ার পথে পা বাড়িয়েছেন।      

মূল আর্টিকেল : How To Remove Dead Bodies From Mount Everest? 

লেখক : Natasha Poletaeva

ওয়েবসাইট : Mountain Planet

লিংক :  How To Remove Dead Bodies From Mount Everest?

See all
Rental Gear
Price: $8.00 / per day

Location: Italy, Milan, Lombardy, Metropolitan City of Milan, Milan

0 reviews
Add to wishlist